সোমবার, ১৯ জুলাই, ২০১০

উচ্চ ফলনশীল সুস্বাদু মুখী কচুর চাষ

উচ্চ ফলনশীল সুস্বাদু মুখী কচুর চাষ

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগৃহীত ১৮/২০টি জাত হতে গবেষণার মাধ্যমে বিলাসী নামে একটি উফশী জাত উদ্ভাবন করা হয় এবং ১৯৮৮ অনুমোদনকরা হয় জাতটি। বিলাসী গুণে উৎকৃষ্টও উচ্চ ফলনশীল। বিলাসী মুখী কচুর জাত।

মুখী কচু একটি সুস্বাদু সবজি। এ সবজি খরিফ মৌসুমের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই এর চাষ হয়। মুখী কচু বাংলাদেশে গুড়াকচু, কচু, ছড়া কচু, দুলি কচু, বিন্নি কচু ইত্যাদি নামেও পরিচিত। মুখীর ছড়া বীজ হিসেবেব্যবহার করা হয়। মুখী কচুর গাছ হলদে হয়ে শুকিয়ে গেলে এ কচু তুলতেহয়। এতে ৬ থেকে ৭ মাস সময় লাগে।


বিলাসী জাতের গাছ সবুজ, খাড়া, মাঝারি লম্বা, এর মুখী খুবমসৃণ, ডিম্বাকৃতির হয়।সিদ্ধ মুখী নরম ও সুস্বাদু। সিদ্ধ করলে মুখীসমানভাবে সিদ্ধ হয় ও গলে যায়।


বিলাসীর জীবনকাল ২১০ থেকে ২৮০ দিনের। সাধারণ অবস্থায় এর ফলনহেক্টর প্রতি প্রায় ২৫ থেকে ৩০ টন। উন্নত পদ্ধতিতে চাষ করলে হেক্টর প্রতি ৪০ টন পর্যন্ত ফলন হয়ে থাকে। দো-আঁশ মাটি এই জাতের জন্য উত্তম।


রোপণের সময় : মধ্য মাঘ থেকে মধ্য ফালগুন। মধ্য চৈত্র থেকে মধ্য বৈশাখ।


রোপণ পদ্ধতি : উর্বরা মাটির জন্য সারি থেকে সারির দূরত্ব ৭৫সেঃ মিঃ গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ৪৫ সেঃ মিঃ। অনুর্বর মাটির বেলায় সারি থেকে সারির দূরত্ব ৬০সেঃ মিঃ এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ৪০ সেঃ মিঃ রাখতে হয়।


বীজরে পরিমাণ : ২ থেকে ২.৫ গ্রাম (প্রতি শতাংশে এবং ছড়ার ওজন১৫ থেকে ২০ গ্রাম)


বীজ বপনের গভীরতা : ৮ থেকে ১০ সেঃ মিঃ


উৎপাদন :১০০ থেকে ১২০ কেজি (প্রতি শতাংশে)


সারের পরিমাণ ও প্রয়োগ পদ্ধতি :

গোবর/কম্পেস্ট সার ১০ কেজি, ইউরিয়া ৪০০গ্রাম, টিএসপি ৫০০ গ্রাম, এমওপি ৪০০ গ্রাম, জিপসাম ২০গ্রাম, জিং ৫গ্রাম। গোবর, টি এসপি এবং এমওপি রোপণের সময় এবং ইউরিয়া ৪০ থেকে ৪৫ দিনপর প্রয়োগ করা ভাল।

অন্তরর্বর্তীকালীন পরিচর্যা :

১. সার উপরি প্রয়োগের পর গাছের গোড়ার মাটি টেনে দিতেহবে। জমিআগাছা মুক্ত করা, খরার সময় প্রয়োজনে সেচ দেওয়া এবং অতি বৃষ্টিতে পানিনিস্কাশনের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।

২. মুখী কচু মাটির নিচে হয় বলে মাটি ঝুরঝুরা রাখাবাঞ্চনীয়।


৩. গাছের গোড়া মালচিং এর মাধ্যমে ঢেলে দিলে গুড়ি চারার সংখ্যাকমে আসে তাতে ছড়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

৪. গাছের পাতা ছোট হয়ে হলুদ বর্ণ ধারণ করলে ফসল সংগ্রহ করাউচিত।

মুখী কচু চাষাবাদ করতে গিয়ে কোন সমস্যায় পড়লে আপনি কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরে কর্মরত নিকটস্থ উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন