শনিবার, ১৭ জুলাই, ২০১০

সবজির প্রধান প্রধান ক্ষতিকারক পোকা ও রোগসমূহ দমন ব্যবস্থা

সবজির প্রধান প্রধান ক্ষতিকারক পোকা ও রোগসমূহ দমন ব্যবস্থা

পোকা মাকড়/ রোগের নাম

আক্রান্ত শাক-সবজি

দমন পদ্ধতি

ফলের মাছি পোকা

সব ধরনের কুমড়া জাতীয় সবজি, টমেটো, ঢেঁড়স, সীম, শসা

আক্রান্ত ডগাগুলি তুলে ফেলুন এবং মাটিতে পুঁতে ফেলুন। বিষ টোপ (১০০ গ্রাম মিষ্টি কুমড়া এবং ৮/৯ ফোটা নগস)দিয়ে পোকা-মাকড় মেরে ফেলুন।

জাব পোকা

বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপি, শালগম, মূলা, বরবটি, টমেটো

জাব পোকা হাতের সাহায্যে মারাই উকৃষ্ট পদ্ধতি। যদি এভাবে দমন না হয় তখন সুপারিশকৃত কীটনাশক সাবধানে ব্যাবহার করতে হবে যাতে মৌমাছি এবং পরাগায়নে সহায়তাকারী পতংগের কোনরূপ ক্ষতি না হয়। সাবান পানি দিয়েও দমন করা যায়।

বিটল

কুমড়া জাতীয় সবজি, শসা

বিটল হাতে তুলে মারা যায় এবং কেরোসিন ও কাঠের ছাই ছিটিয়েও দমন করা যায়। বেশী আক্রান্ত হলে সুমিথিয়ন, ফলিথিয়ন জাতীয় তরল স্প্রে করতে হবে এবং ফুরাডান, বাসুডিন বা ঐ জাতীয় দানাদার কীটনাশক মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে।

কাটুই পোকা

বাঁধাকপি, ফুলকপি, পেঁপে, বেগুন, আলু, টমেটো

আক্রান্ত গাছ (শাখা ও ডগার কাটা অংশ) খুঁজে তার নিকট মাটি থেকে কাটুই পোকা বের করে বিনষ্ট করতে হবে। ছোট গাছগুলির চারিদিকে ছাই-কেরোসিন মিশ্রণ প্রয়োগ করতে হবে। তবে চিটাগুড়, হেপ্টাক্লোর এবং ধানের তুষ মিশিয়ে সন্ধ্যায় জমিতে দিয়ে দমন করা যায়।

ডগা এবং ফলের মাজরা পোক/ কান্ডের মাজরা পোকা

ঢেঁড়স, বেগুন, টমেটো, সীম

আক্রান্ত ডগা ও ফল সংগ্রহ করে ধ্বংস করুন। পাতা ও ডগা থেকে সংগৃহীত পোকার ডিমগুলি ধ্বংস করুন।গাছে ছাই ব্যবহার করুন।

সাদা মরিচা

লাল শাক ও ডাঁটা শাক

আক্রান্ত অংশ ধ্বংস করে ফেলুন।

মোজাইক ভাইরাস

ঢেঁড়স, টমেটো, পেঁপে, মিষ্টিকুমড়া, আলু, শসা, বাঁধাকপি

আক্রান্ত গাছগুলি উপড়ে ফেলুন এবং জাবপোকা, পাতাফড়িং ও অন্যান্য বাহক পোকা যাতে রোগ ছড়াতে না পারে সেজন্য আক্রান্ত গাছ পুড়িয়ে ফেলুন।

পাতা মোড়ানো ভাইরাস

ঢেঁড়স, মিষ্টিকুমড়া, টমেটো, বেগুন

তাক্ষনিকভাবে আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলুন এবং আগাছা পরিস্কার করুন। এই রোগ বহনকারী পোকা-মাকড় দমন করুন।

পাতায় দাগরোগ

বাঁধাকপি, পুঁইশাক, পালংশাক, মূলা, সীম, টমেটো, লাউ, বেগুন করল্লা

আক্রান্ত গাছ আংশিক বা সম্পূর্ণ উপড়ে ফেলুন। বোর্দ্দ মিক্সার প্রয়োগ করুন। আগাছা পরিস্কার করে ও শস্য পর্যায় অবলম্বন করে ভালো ফল পাওয়া যায়।

ঢলে পড়া রোগ

বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, বেগুন

রোগ মুক্ত বীজ ব্যবহার করুন এবং পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন। ডায়াথেন এম-৪৫ প্রয়োগ করুন।

ফিউজারিয়াম উইল্ট

বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, বেগুন সীম, শসা

রোগ প্রতিরোধী জাতের বীজ ব্যবহার, শস্য চক্র অবম্বন করুন, আক্রন্ত গাছ উপড়ে ফেলুন এবং বোর্দ্দ মিক্সার ব্যবহার করুন।

পাউডারী মিলডিউ

টমেটো, বেগুন, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, চালকুমড়া, করল্লা

আক্রান্ত গাছের অংশ বা সম্পূর্ণ গাছ পুড়িয়ে ফেলুন এবং বোর্দ্দ মিক্সার স্প্রে করুন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: উপরোক্ত অজৈব পদ্ধতিগুলি প্রয়োগের সুপারিশ শুধুমাত্র তখনই করা হয় যখন সর্ব প্রকারের জৈব পদ্ধতি অকার্যকর বলে প্রতীয়মান হয়।

মরিচ

রোগের নামঃ কৃমিজনিত রোগ বা রূটনট নেমাটোড

রোগের কারণঃ মেলডোগাইন প্রজাতির কৃমি

লক্ষণঃ
শিকড়ে ছোট ছোট গিট দেখা যায় গিটগুলো আস্তে আস্তে বড় হয় রোগাক্রান্ত গাছটি খাটো ও খর্বাকার হয় রোগাক্রান্ত শিকড়ে সহজেই পচন ধরেমাটিবাহিত অন্যান্য রোগের প্রকোপ বাড়ে পরিশেষে গাছ মরেও যেতে পারে

রোগের বিস্তারঃ কৃমি মাটিবাহিত রোগ ও রোগাক্রান্ত শিকড়ের মাধ্যমে ছড়ায়

...বিস্তারিত পড়ুন...
পুঁই

রোগের নামঃ কৃমিজনিত রোগ বা রূটনট নেমাটোড

রোগের কারণঃ মেলডোগাইন প্রজাতির কৃমি

লক্ষণঃ
শিকড়ে ছোট ছোট গিট দেখা যায় গিটগুলো আস্তে আস্তে বড় হয় রোগাক্রান্ত গাছটি খাটো ও খর্বাকার হয় রোগাক্রান্ত শিকড়ে সহজেই পচন ধরেমাটিবাহিত অন্যান্য রোগের প্রকোপ বাড়ে পরিশেষে গাছ মরেও যেতে পারে

রোগের বিস্তারঃ কৃমি মাটিবাহিত রোগ ও রোগাক্রান্ত শিকড়ের মাধ্যমে ছড়ায়

...বিস্তারিত পড়ুন...
ঢেড়শ

রোগের নামঃ কৃমিজনিত রোগ বা রূটনট নেমাটোড

রোগের কারণঃ মেলডোগাইন প্রজাতির কৃমি

লক্ষণঃ
শিকড়ে ছোট ছোট গিট দেখা যায় গিটগুলো আস্তে আস্তে বড় হয় রোগাক্রান্ত গাছটি খাটো ও খর্বাকার হয় রোগাক্রান্ত শিকড়ে সহজেই পচন ধরেমাটিবাহিত অন্যান্য রোগের প্রকোপ বাড়ে পরিশেষে গাছ মরেও যেতে পারে

রোগের বিস্তারঃ কৃমি মাটিবাহিত রোগ ও রোগাক্রান্ত শিকড়ের মাধ্যমে ছড়ায়

...বিস্তারিত পড়ুন...
বরবটি

রোগের নামঃ কৃমিজনিত রোগ বা রূটনট নেমাটোড

রোগের কারণঃ মেলডোগাইন প্রজাতির কৃমি

লক্ষণঃ
শিকড়ে ছোট ছোট গিট দেখা যায় গিটগুলো আস্তে আস্তে বড় হয় রোগাক্রান্ত গাছটি খাটো ও খর্বাকার হয় রোগাক্রান্ত শিকড়ে সহজেই পচন ধরেমাটিবাহিত অন্যান্য রোগের প্রকোপ বাড়ে পরিশেষে গাছ মরেও যেতে পারে

রোগের বিস্তারঃ কৃমি মাটিবাহিত রোগ ও রোগাক্রান্ত শিকড়ের মাধ্যমে ছড়ায়

...বিস্তারিত পড়ুন...
লাউ/কুমড়া/শসা

রোগের নামঃ পাউভারি মিলভিউ

কারণঃ ওইউিয়াম প্রজাতির ছত্রাক

লক্ষণঃ

এ ছত্রাকের আক্রমন প্রথমে বয়স্ক পাতায় দেখা যায় পাতার উপরের দিকে সাদা পাউডারের মত প্রলেপ পরে ক্রমান্বয়ে উপরের দিকের পাতাও আক্রানত গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে ব্যাঘাত ঘটে আক্রমনের প্রথম স্তরে দাগগুলো সাদা ও ধীরে ধীরে হলুদ হয়ে সম্পূর্ণ পাতাই শুকিয়ে ঝরে পড়ে


...বিস্তারিত পড়ুন...
বাঁধা কপি/ফুল কপি/মুলা

রোগের নামঃ ড্যাস্পিং অফ

কারণঃ পিথিয়াম এ্যফিনেডারমেটাম, স্কেলেরোসিয়াম, রাইজকটোনিয়া, ফিউপেরিয়াম প্রভৃতি প্রজাতির ছত্রাকের আক্রমনে এ রোগ হয়ে থাকে

লক্ষণ:

আক্রান্ত অংকুরিত চারার রং ফ্যাকাসে সবুজ হয় ও কান্ডের নীচের দিকে মাটি বরাবর বাদামী রঙের পানি ভেজা দাগ পড়ে বীজতলায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব সর্বাধিক দেখা যায় অনুকুল পরিবেশে এক সপ্তাহের মধ্যে বীজতলার সমস্ত চারা মারা যেতে পারে এ রোগের জীবানু প্রধানতঃ মাটিতে থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পেলে এগুলো দ্রুত যৌন পদ্ধতিতে বংশ বিস্তার করে থাকে এ রোগের আক্রমন বীজ অস্কুরোদগমনের আগেও হতে পারে অর্থাৎ বীজ বপনের পর মাটিতে থাকা ছত্রাকের আক্রমনে বীজ নষ্ট হয়ে যেতে পারে
আক্রান্ত জায়গার চারার গোড়া পচে যায় ও চারা মারা যায়

...বিস্তারিত পড়ুন...
বেগুন

রোগের নামঃ ফল ও কান্ড পচা

কারণ: ফোমপসিস ভেকসান নামক ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত এটি বীজবাহিত রোগ

লক্ষণ:
মাটির সংযোগস্থেল গাছের কান্ড হঠাৎ সরূ হয়ে যায় পাতা ঝরে পড়ে, কান্ডের বাকল শুকিয়ে যায় আক্রান্ত স্থলে কাল ক্ষতের সৃষ্টি হয় ও ক্ষত স্থানে কালো ছত্রাক দেখা যায় আক্রান্ত ফল দ্রুত পচে যায়

...বিস্তারিত পড়ুন...
টমেটো

১. রোগের নামঃ আগাম ধ্বসা বা আর্লি ব্লাইট
অলটারনেরিয়া সোলানি নামক ছত্রাকের আক্রমনে এ রোগ হয়ে থাকে এটি বীজবাহিত

লক্ষণঃ
এ রোগ যে কোন সময় হতে পারে রোগের জীবাণু গাছের পাতা, কান্ড ও ফল আক্রমন করে থাকে সাধারণত বয়স্ক পাতায় এ রোগের লক্ষণ প্রথম দেখা যায় পরবর্তীতে অন্যান্য পাতায় ছড়িয়ে পড়ে আক্রান্ত পাতার উপর কালো কিংবা বাদামী রংয়ের বৃত্তাকার দাগ পড়ে ক্ষতস্থানটিতে অনেকগুলো চক্রাকার দাগ থকে যাহা এ রোগের একটি বিশেষত্ব রোগের ব্যাপকতার সাকে অনেকগুলো দাগ একত্রিত হয়ে বড় দাগের সৃষ্টি করে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত পাতা ঝরে পড়ে পুস্প মঞ্জুরীর বোঁটা আক্রান্ত হলে ফুল ও অপ্রাপ্ত ফল ঝরে পড়ে ফলের গায়ে ও বৃত্তাকার দাগের সৃষ্টি হয়


...বিস্তারিত পড়ুন...
কচু

কচু বাংলাদেশের একটি প্রধান সবজি এতে প্রচুর পরিমাণ শ্বেতসার, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ফসফরাস এবং ভিটামিন এ ও সি রয়েছে কচু সাধারণত খরিপ মৌসুমে চাষ করা হয় এটি খরিপ মৌসুমের শতকরা প্রায় ২৬ ভাগ দখল করে থাকে বর্ষার শেষ ভাগে বাজারে সবজির প্রকট ঘাটতি দেখা যায় এ সময় কচুই সবজির ঘাটতি অনেকটা পুরণ করে থাকে বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া কচু চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী অন্যান্য ফসলের ন্যায় কচুও নানা রোগ বালাই দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে, যার ফলে এর ফলন হ্রাস পায় নিম্নে কচুর বিভিন্ন রোগ ও তার দমন ব্যবস্তা নিয়ে আলোচনা করা হল এছাড়া এর স্টার্চ কণা ছোট বলে শিশু খাদ্য হিসেবে সহজেই ব্যবহার করা যায়

২টি মন্তব্য: