শনিবার, ১৭ জুলাই, ২০১০

কিভাবে চিনবো ভেজাল সার?

ইউরিয়া

  • এই সারে ব্যাপক হারে ভর্তুকী প্রদানের ফলে দাম তুলনামূলকভাবে অন্যান্য সারের চেয়ে কম। তাই এই সারে ভেজালের মাত্রা তুলনামূলক বিচারে খুবই কম।
  • বর্তমানে ছোট সাদা দানা, বড় আকৃতির ধবধবে সাদা দানাদার এবং প্রিল এই তিন আকৃতির সার বাজারজাত হচ্ছে।
  • ইউরিয়া সার কোন অবস্থাতেই স্ফটিক আকার হবে না।

টিএসপি

  • অম্ল স্বাদ যুক্ত ঝাঁঝলো গন্ধ থাকবে।
  • এক চামচ টিএসপি সার আধা গ্লাস পানিতে মিশালে টিএসপি সার দ্রবীভূত হয়ে পরিষ্কার দ্রবণ তৈরী করবে।
  • ভেজাল টিএসপি সার পানিতে ঘোলা দ্রবন তৈরী করবে।
  • টিএসপি সার অধিক শক্ত বিধায় দুটো বুড়ো আঙ্গুলের নখের মাঝে রেখে চাপ দিলে সহজে ভেংগে যাবেনা।
  • ভেজাল টিএসপি সার দুটো বুড়ো আঙ্গুলের নখের চাপে ভেংগে যাবে এবং ভাংগা গুড়ার রঙ নানা রকমের হতে পারে।

এসএসপি

  • এক চামচ এসএসপি সার আধা গ্লাস পানিতে মিশালে এসএসপি সার সম্পুর্ণ দ্রবীভূত হবে তবে দ্রবণটি হবে ঘোলাটে।
  • অধিকাংশ সময়েই এ সার গুড়া আকারে পাওয়া যায়। দানাদার এসএসপি সার অধিক শক্ত বিধায় দুটো বুড়ো আঙ্গুলের নখের মাঝে রেখে চাপ দিলে সহজে ভেংগে যাবে।
  • সারের সাথে ৫-১০% হাইড্রোক্লোরিক এসিডের দ্রবণ দিলে কোন প্রকার বুদবুদ লক্ষ্য করা যাবে না। কেবল মাত্র ডলোমাইট মিশ্রিত থাকলেই কার্বন ডাই অঙাইডের বুদ বুদ উrপন্ন হবে।

ডিএপি

  • মান সম্পন্ন ডিএপি সার কিছুক্ষণ বাতাসে রাখলে ভিজে ওঠে কারণ এতে নাইট্রোজেনের মিশ্রন রয়েছে যা বায়ুমন্ডল থেকে আর্দ্রতা শোষণ করতে পারে।

এফএমপি (ফিউজডম্যাগনেসিয়ামফসফেট)

  • এ সারেও টিএসপি সারের ন্যায় ঝাঁঝালো গন্ধ থাকে এবং রং অনেকটা টিএসপি সারের মত হওয়ায় অনেক সময় টিএসপি সার হিসেবে বাজারে বিক্রি হয়ে থাকে।
  • কোন কোন এফএমপি সারের কয়েকটি দানা এক গ্লাস পানিতে কয়েকদিন রেখে দিলেও সামান্য পরিমাণেও দ্রবীভূত হবে না।

এমওপি

  • এক চামচ এমওপি সার আধা গ্লাস পানিতে মিশালে এমওপি সার সম্পুর্ণ দ্রবীভূত হয়ে পরিষ্কার দ্রবণ তৈরী করবে এবং রং হাতে লাগবে না।
  • ভেজাল এমওপি সারের নমুনায় কিছু অদ্রবনীয় বস্তু যেমন বালি,কাঁচের গুড়া, সাদা পাথরের গুড়া ইত্যাদি মেশালে জলীয় দ্রবনে তা তলানী আকারে গ্লাসের নীচে জমা থাকবে।
  • অধিকাংশ সময়ে এধরণের সারে মিহি বালি মেশানো হয়।
  • ভেজাল সারের নমুনায় লাল বা অন্য কোন রং মিশালে পানির রং সেই অনুযায়ী হবে এবং জলীয় দ্রবনে হাত দিলে হাতে রং লেগে যাবে। এ ছাড়া সারের নমুনা হাত দিয়ে স্পর্শ করলেই হাতে রং লেগে যেতে পারে।

জিংকসালফেট (হেপ্টাহাইড্রেট)

  • জিংক সালফেট হেপ্টাহাইড্রেট দেখতে স্ফটিকাকার।
  • ঠান্ডা পানিতে জিংক সালফেট ( হেপ্টা হাইড্রেট) সম্পুর্ণ গলে যায়, পাত্রে কোনরূপ তলানী থাকে না।

জিংকসালফেট (মনোহাইড্রেট)

  • জিংক সালফেট (মনো হাইড্রেট) দেখতে দানাদার।
  • ঠান্ডা পানিতে জিংক সালফেট ( মনো হাইড্রেট) সম্পুর্ণ গলে না এবং দ্রবণ ঘোলাটে হবে।
  • ম্যাগনেশিয়াম সালফেট দিয়ে তৈরী ভেজাল জিংক সালফেট সার দেখতে ধবধবে সাদা।
  • ম্যাগনেশিয়াম সালফেট দিয়ে তৈরী ভেজাল জিংক সালফেট সারে সোডিয়াম কার্বনেট মিশিয়ে পানিতে দ্রবিভূত করলে ঘোলাটে দ্রবণ তৈরী হবে এবং প্রচন্ড পরিমাণে বুদবুদ উঠবে। অন্যদিকে সারটি আসল জিংক সালফেট হলে পরিস্কার বা সচ্ছ দ্রবণ তৈরী হবে এবং কোন বুদবুদ উঠবে না। এ ছাড়া সোডিয়াম কার্বনেট তলানী হিসেবে তলানী দ্রবণে জমা হবে।
  • ম্যাগনেশিয়াম সালফেট দিয়ে তৈরী ভেজাল জিংক সালফেট সারে সোডিয়াম কার্বনেট মিশিয়ে পানিতে দ্রবিভূত করলে ঘোলাটে দ্রবণ তৈরী হবে এবং প্রচন্ড পরিমাণে বুদবুদ উঠবে।
  • সারটি আসল জিংক সালফেট হলে পরিস্কার বা সচ্ছ দ্রবণ তৈরী হবে এবং কোন বুদবুদ উঠবে না।
  • এ ছাড়া সোডিয়াম কার্বনেট তলানী হিসেবে তলানী দ্রবণে জমা হবে।

চিলেটেডজিংক

  • এ সার দেখতে সাদা অথবা হলদেটে পাউডারের ন্যায় এবং খুবই হালকা।
  • এক গ্লাস ঠান্ডা পানিতে অর্থ চামচ চিলেটেড জিংক মিশালে তাrক্ষণিকভাবে পানিতে দ্রবিভূত হবে।
  • এ সারে সালফার থাকে না বিধায় জলীয় দ্রবনে বেরিয়াম ক্লোরাইড যোগ করলে কোন ঘোলা অধ:ক্ষেপ পড়বে না।
  • ভেজাল চিলেটেড জিংক তাrক্ষণিকভাবে পানিতে দ্রবিভূত হবে না এবং জলীয় দ্রবণে বেরিয়াম ক্লোরাইড যোগ করলে ঘোলা অধ:ক্ষেপ পড়বে।

বোরণসার (বরিকএসিডওবোরাক্স)

  • ঠান্ডা পানিতে বরিক এসিড সম্পূর্ণ গলেনা।
  • বরিক এসিডের দ্রবণে যদি বেরিয়াম ক্লোরাইড মিশানো হয় তবে সারটি বরিক এসিড হলে দ্রবনে কোন অধ:ক্ষেপ পড়বেনা। যদি নমুনাটি সোডিয়াম সালফেট দিয়ে তৈরী ভেজাল বরিক এসিড হয় তবে দ্রবণে অধ:ক্ষেপ পড়বে।

বোরণসার (সলুবর)

  • সলুবর বোরণ দেখতে ধবধবে সাদা হালকা মিহি পাউডারের মত। ঠান্ডা পানিতে সম্পুর্ণ গলে যায় এবং পাত্রে কোনরূপ তলানী পড়ে না।
  • এক কেজি সলুবর বোরণ সারের প্যাকেট এক কেজি বরিক এসিড বা বোরাঙ সারের তুলনায় আকারে বড় হবে কারণ সলুবর ওজনে হালকা, তাই এক কেজি বরিক এসিডের প্যাকেটে আধা কেজি সলুবর সার রাখা যাবে।
  • সলুবর বোরণের দ্রবণে যদি বেরিয়াম ক্লোরাইড মিশানো হয় তবে সারটি সলুবর হলে দ্রবনে কোন অধ:ক্ষেপ পড়বেনা। যদি নমুনাটি সোডিয়াম সালফেট দিয়ে তৈরী ভেজাল সলুবর হয় তবে দ্রবণে অধঃক্ষেপ পড়বে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন